আপনার ভাষায় Dark Web

আপনার ভাষায় Dark Web

Bangla

Anonymous Mask
Anonymous Mask
Anonymous Mask

[ONLY FOR EDUCATIONAL PURPOSES. TESTING OR USING THIS INFORMATION IS YOUR RESPONSIBILITY]


সখিনা:- এই জানো?

আমি:- না, আমি জানি নে।

সখিনা:- আমি ডেইলি ডার্ক ওয়েব চালায়।

আমি:- এ্যাঁহ!!!

সখিনা:- হুম। মানে আমি তো ক্রোম দিয়েই তো পুরো ইন্টারনেট চালায়। বিশেষ করে ওয়েব ব্রাউজ করি। না?

আমি:- হ্যাঁ। তো?

সখিনা:- তো ক্রোমে আমি এখন ডার্ক মোড অন করসি। তাইলে এটা ডার্ক ওয়েব না?

এই ব্যাখ্যা শোনার পর: Logic Left the Chat. টাস্কি আমাকে খেল। আমি টাস্কিকে না।

আমি:- তুমি আদৌ জানো এইটা কি জিনিস?

সখিনা:- নাহ! আমাকে একটু বোঝাও তো!

আমি:- আচ্ছা। বিষয়টা অনেকটা কমপ্লিক্টেড; যতক্ষণ না তুমি বুঝবে। তাই আস্তে ধীরে বোঝাচ্ছি। 

সখিনা:- আচ্ছা!


আমি:- আমরা সাধারণত জানি ভীষণ শীতে পানি জমে বরফ হয়ে যায়। ঠিক তেমনই প্রচন্ড শীতের কারণে সমুদ্রের পানিও জমে যায়। আর এভাবে জমে জমে বিশাল বড় বড় বরফের চাঙারী তৈরি হয়। এগুলোকে বলে আইসবার্গ। একট আইসবার্গের ৩০% পানির উপরে আর ৭০% পানির নিচে থাকে। অন্যদিকে আমাদের ইন্টারনেটকে যদি এই আইসবার্গের সাথে তুলনা করেন, তাহলে এর ৩০% হচ্ছে Surface Web (অর্থাৎ আমরা গুগল/বিং/ইউটিউব/ফেসবুক দিয়ে চালায়) আর বাকি ৭০% হচ্ছে Deep Web. এই সম্পূর্ণ কন্সেপ্টকে বলে আইসবার্গ থিওরি(Iceberg Theory)। এই Deep Web আর Surface Web এর মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে:


১) Surface Web এর কন্টেন্ট Index বা লিস্ট করা বা এন্ট্রি করানো থাকে Google এর মত কোম্পানির সাথে। তাই আমরা সার্চ করলেই সবচেয়ে বেস্ট বেস্ট কন্টেন্টগুলো রেজাল্টের উপরের দিকে পাই। কিন্তু Deep Web এরগুলো এইভাবে Index করা থাকে না এবং এখানে কোনকিছু সার্চ করে খুঁজে বের করা কখনোই সম্ভব না 

২) Deep Web আমাদের থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে লুকিয়ে রাখা।


তো এই Deep Web এর একটা অংশ বা Deep Web এর সবচেয়ে নিচের ছোট্ট একটা অংশই হলো Dark Web। মানে ধর, একটা ১০ তলা বিল্ডিং। এর ১০, ৯, ৮ তলাগুলো হলো Surface Web। ৭ থেকে গ্রাউন্ড ফ্লোর বা ১ তলা পর্যন্ত এই সবগুলো হলো Deep Web। আর ১ নম্বর তলাটাই হলো Dark Web। 

সখিনা:- মূল কথা সংক্ষেপে বলো।

আমি:- ইন্টারনেটের একটা বড় অংশ আমাদের কাছে থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে লুকিয়ে রাখা যার নাম Deep Web আর এর সবচেয়ে নিচের ছোট্ট অংশই হলো Dark Web.

সখিনা:- আচ্ছা এই ডার্ক ওয়েব আমাদের থেকে লুকায় রাখসে কীভাবে?

আমি:- পেঁয়াজ দিয়ে।

সখিনা:- এ্যাহঁ!!!


আমি:- আমাদের সম্পূর্ণ ওয়েবের সব ঠিকানারই একটা করে ডোমেইন বা এক্সটেনশন আছে। মানে, আমরা জানি google এর ওয়েব বা ওয়েবসাইটের url বা ঠিকানা হলো www.google.com আর এই url এর এক্সটেনশন হলো .com। এখন আমাদের নরমাল ব্রাউজার যেমন, ক্রোম, ফায়ারফক্স দিয়ে এই ওয়েবগুলো এক্সসেস করা যায়। কিন্তু ডার্ক ওয়েবের url গুলোর এক্সটেনশন হলো .onion; অর্থাৎ ডার্ক ওয়েবের ওয়েবগুলোর url দেখতে এরকম:

http:// 7sfx2ubbcsjzdzyqcvv5glnpaxnhbmlt7yxuu4rgyctxkopjjlmz2wqd. onion


তো এই .onion এক্সটেনশন ব্যবহারের ফলে এই ওয়েবগুলোর উপর কয়েকস্তরের সিকিউরিটি লেয়ার লেগে যায়। যার ফলে আমার নরমাল ব্রাউজার দিয়ে আর এই ওয়েবগুলো এক্সসেস করা যায় না। এর জন্য লাগে বিশেষ Darknet Software (যেমন- Tor, I2P, Freenet) এবং এগুলো ব্যবহারের করে যখন ইউজার কমিনিউকেশন করে, তখন তার পরিচয় মানে নেটওয়ার্কের উপরও প্রায় ৩ লেয়ারের একটা সিকিউরিটি লাগে। যার ফলে তার পরিচয় পাওয়া অনেক কষ্টকর হয়, যদি না সে নিজে থেকে তথ্য দেয়। আর এই যে পেঁয়াজের মত কয়েক স্তরের সিকিউরিটি লেয়ারের কন্সেপ্টকে বলে Onion Routing।


সখিনা:- আচ্ছা, ভিপিএন দিয়ে কি ডার্ক ওয়েবে ঢুকা যায়?

আমি:- নাহ! ভিপিএন তোমার নেটওয়ার্কের উপর একটা সিকিউরিটি লেয়ার ব্যবহার করে। কিন্তু তোমার ব্রাউজারের পক্ষে তারপরেও সম্ভব হবে না .onion লোড করা। এক্ষেত্রে একটা Darknet Software লাগবেই। এখানে একটা মজার বিষয় হচ্ছে, আমরা যখন ভিপিএন ব্যবহার করি, তখন ১ স্তরের একটা সিকিউরিটি লেয়ার লাগে। তাতেই নেটের অবস্থা ১২টা বাজে আর এখানে প্রায় ৩ স্তরের লেয়ার লাগে। সেইখানের নেটের অবস্থা নিয়ে তাই আর বলার কিছু নাই। আর এই কারণে ডার্ক ওয়েবের ওয়েবসাইটগুলো সবসময় সম্পূর্ণ HTML এর উপর বানানো হয় থাকে এবং পারতপক্ষে CSS ব্যবহার করা হয়। তাই সেখানকার ওয়েবগুলো দেখতে খুবই সাদামাটা হয়। 


সখিনা:- আচ্ছা ডার্ক ওয়েব বানাইসে কখন?

আমি:- মূলত যখন ৭০ এর দশকে যখন আরপানেট আবিষ্কৃত হয়, তখনই ডার্ক ওয়েবের জন্ম। তবে তখন এতো সিকিউরিটি ছিল না। '৮০ - '৯০ এর দশকে যখন Cypher punk আন্দোলন হচ্ছিল, তখনকার সময়ে ডার্ক ওয়েবেও ইউজারদের ট্রেস করা যেতো। ১৯৯০ সালে U.S. Naval Research Laboratory যে প্রজেক্ট লঞ্চ করে, তার নাম Tor যার পূর্ণরূপ The Onion Routing; তবে সেটা উন্মুক্ত করার আগেই, ২০০০ সালে একজন আইরিস লঞ্চ করেন FreeNet যেটা ছিল প্রথম DarkNet সফটওয়্যার।

সখিনা:- ডার্ক ওয়েবে এত্তো ইললিগ্যাল কাজ কি শুরু থেকেই চলে বা শুরু থেকেই কি এটা এত্তো জনপ্রিয়?

আমি:- ২০০২ সালে টরও উন্মুক্ত করে দেয় কারণ, যত বেশি মানুষ এটা ব্যবহার করবে, ততই তাদের কাজকর্ম সেখানে ট্রেস করা কষ্টকর হবে। এরপর থেকেই ডার্ক ওয়েব জনপ্রিয় হতে শুরু করে। শুরুর দিকে শুধু রিসার্চার আর সেসকল মানুষ যারা প্রাইভেসি বা প্রাইভেট নেটওয়ার্ক খুঁজতেসিলো তারাই শুধু ব্যবহার করতো ডার্ক ওয়েব। ২০১১ সালে জন্ম হয় "Silk Road" এর। আর এরপরই মূলত ডার্ক ওয়েব হয়ে যায়, The Darkest Side of Internet.

সখিনা:- ও আল্লা, গো! আমার ডর লাগে। আমি আর শুনবো না। পর শুনবো। যাই গা।

আমি:- (মেইন কাহিনী তো শুরুই করলাম না।)


(কিছুক্ষণ পর)

সখিনা:- আচ্ছা, সিল্ক রোড কি সিল্ক কালার?

আমি:- কিহ?

সখিনা: না মানে তুমি না বললা সিল্ক রোডের কথা। ওইটা কি সিল্ক কালার। আর ওইটাতে বাংলাদেশ থেক যেতে কি পাসপোর্ট লাগে?

আমি:- ওইটা ওয়েবসাইট🙂

সখিনা:- একটু বল না ওইটা সম্পর্কে।

আমি:- তোমার না ডর লাগে?

সখিনা:- দিনের বেলা লাগে না। তুমি বল।

আমি:- সিল্ক রোড হলো অনলাইনে ইললিগ্যাল ডিলিং এর সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস যেটার পুরোটাই ডার্ক ওয়েবে।


সখিনা:- আচ্ছা পুরো ডার্ক ওয়েবেই কি খারাপ কাজ হয়?

আমি:- না। একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে। দৈনিক মোট ইন্টারনেট ব্যবহারের ৫ থেকে ৬% কভার করে ডার্ক ওয়েব। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে চালানো একটা জরিপে দেখা যায়, সম্পূর্ণ ডার্ক ওয়েবের মধ্যে gambling এ ব্যবহার হয় 0.4%, arms trade এ ব্যবহার হয় 1.4%, chatting এ ব্যবহার হয় 2.2%, sexual abuse এ ব্যবহার হয় 2.2%, Internet-based books এ ব্যবহার হয় 2.5%, directory এ ব্যবহার হয় 2.5%, Blogging এ ব্যবহার হয় 2.75%, Pornography এ ব্যবহার হয় 2.75%, Hosting services এ ব্যবহার হয় 3.5%, Hacking এ ব্যবহার হয় 4.25%, Search engine এ ব্যবহার হয় 4.25%, forum এ ব্যবহার হয় 4.75%, fake  5.2%, leaked 5.2%, wiki 5.2%, e-mail 5.7%, Bitcoin exchange এ ব্যবহার হয় 6.2%, fraud 9%, Marketing  এ ব্যবহার হয় 9%, drug dealing এ ব্যবহার হয় 15.4%

সখিনা:- 🙂🙂

আমি:- আবার ২০১৬ এর ফেব্রুয়ারিতে এসে আরেক জরিপে দেখা যায়, সম্পূর্ণ ডার্ক ওয়েব থেকে violence এ 0.3%, arms trade  এ 0.3%, social এ 1.2%, Hacking এ  1.4%, Pornography এ 2.3%, Other illegal services এ 3.8%, Finance এ 6.3%, drug dealing  এ 8.1% ব্যবহার হয়। তাহলে বর্তমান অবস্থা নিশ্চয় বুঝতোসোই।

সখিনা:- মানে একটা বড় অংশ খারাপ কাজে থাকলেও সম্পূর্ণটাই খারাপ না।

আমি:- হ্যাঁ। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে University of Portsmouth এর একজন গবেষক Gareth Owen তার একটা স্টাডিতে পান, ডার্ক ওয়েবের সবচেয়ে জনপ্রিয় আর ডিমান্ডেবল টপিক হলো: Child Pornography. 

সখিনা:- ছি! বাচ্চাদের নিয়ে!!

আমি:- হ্যাঁ। সাথে এই স্টাডিতে উনি আরো পান, বিটকয়েন, ফ্রড রিলেটেড সার্ভিস আর মেইলে অর্ডারের সার্ভিস সেখানকার সবচেয়ে প্রফিটেবল বিজনেস।

সখিনা:- ফ্রড রিলেটেড বিজনেস!!

আমি:- হ্যাঁ। বিভিন্ন জায়গায় বলা হয়ে থাকে ডার্ক ওয়েবে প্রফেশনাল শুটার আর কিলার ভাড়া করা যায় মানুষ মারার জন্য। বিশেষত রেড রুমে এদের পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই নিয়ে বিভিন্ন কাহিনীও প্রচলিত। কিন্তু কিলারদের ডার্ক নেট থেক ভাড়া করা হয়সে এর স্বপক্ষে তেমন জোরালো কোন প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই। তাই এটাকে গুজব বলে বর্তমানে ধারণা করা হয়। 

সখিনা:- তাহলে কি এটা গুজবই?

আমি:- কোন জোরালো প্রমাণ না থাকায় এই সম্পূর্ণ কন্সেপ্টটাকে অনেকে গুজব বলে। যদিও যারা এটাকে সত্যি মনে করা তাদের সংখ্যাও নেহাতই কম নয়।

সখিনা:- তুমি কোন দলে?

আমি:- যে দল বিরিয়ানি দেবে🙂

সখিনা:- পেটুক কোথাকার

আমি:- ধন্যবাদ☺️

সখিনা:- আচ্ছা যেটা বলতেসিলা সেটা বল।

আমি:- কী জানি বলতেসিলাম?

সখিনা:- সিল্ক রোড নিয়ে বলা বাকি।

আমি:- ও আচ্ছা হ্যাঁ। তো ডার্ক ওয়েবে যে অবৈধ জিনিস বেচা-কেনা করা হয় বা যায় এই বিষয়টা অনেক পপুলার হওয়ার শুরু করে যখন Silk Road আর Diabolus Bazaar এর কথা মিডিয়ায় আসে। 

সখিনা:- এগুলো কি?

আমি:- এগুলো হলো ডার্ক নেট মার্কেট। এখানে মূলত ড্রাগস বেচা হয়। তবে অন্যান্য অবৈধ জিনিসও বেশ ভালোই বেচাকেনা হয়। 

সখিনা:- ওইখানে কি গুলিও বেঁচে?

আমি:- হ্যাঁ। তবে সিল্ক রোড বানানোর ২ বছর পর তার প্রতিষ্ঠাতা রোস উলব্রিচট গ্রেপ্তার হন। এছাড়া ডার্ক ওয়েবে অনেক অনেক গ্রুপ হ্যাকিং রিলেটেড সার্ভিস দেয়। এদের মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটা হলো: xDedic, hackforum, Trojanforge, Mazafaka, dark0de, TheRealDeal darknet market ইত্যাদি।

সখিনা:- ওরা কি সবাই ব্ল্যাক হ্যাট?

আমি:- না সবাই ব্ল্যাক হ্যাট না। অনেকে গ্রে হ্যাটও আছে।

সখিনা:- হোয়াইট হ্যাট নাই?

আমি:- হোয়াইট হ্যাট তো আরামসে Surface Web এ এই সার্ভিস দিতে পারে। ডার্ক ওয়েবে কষ্ট করার কি দরকার?

সখিনা:- তাও ঠিক, তাও ঠিক।

আমি:- ডার্ক ওয়েবের আরেকটা সবচেয়ে জনপ্রিয় বিষয় হলো "Cicada 3301" নামে একটা পাজল যেটা পাবলিশ হয় খুবই বুদ্ধিমান কিছু মানুষ খোঁজার জন্য।

সখিনা:- আমার তো তাহলে ওই পাজল সলভ করা উচিত ছিল। 

আমি:- 🙂

সখিনা:- আচ্ছা ডার্ক ওয়েবে কোন ধরণের সোশ্যাল মিডিয়া নাই? মানে ফেসবুক, ইউটিউবের মত?

আমি:- ফেসবুকের নিজেরই ডার্ক ওয়েব সাইট আছে।

সখিনা:- অ্যাঁহ!!!

আমি:- হ্যাঁ। সাথে বিবিসির মত প্রতিষ্ঠানেরও ডার্ক ওয়েবে সাইট আছে। যাতে চীন, ইরান আর ভিয়েতনামের মত দেশের মানুষও বিবিসি পড়তে পারে।

সখিনা:- কেন? ওরা নরমাল ইন্টারনেট থেকে পড়তে পারে না?

আমি:- না। ওদের দেশে বিবিসি ব্যানড।

সখিনা:- আচ্ছা ডার্ক ওয়েবের লিংকগুলোতো খুবই অদ্ভুদ। তো কোন ওয়েবসাইট বা কোনকিছু খুঁজে পাই কি করে?

আমি:- সরাসরি লিংক দিয়ে।

সখিনা:- সার্চ দিতে না পারলে লিংক পাবো কেমনে?

আমি:- Pastebin, YouTube, Twitter, Reddit ইত্যাদি ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া।

সখিনা:- আচ্ছা ডার্ক যে এত্তো ক্ষতিকর, এটা বন্ধ করে দেয় না কেন?

আমি:- ডার্ক ওয়েবকে যতটা ক্ষতিকর ভাবা হয়, আদতে সে তার তুলনায় অনেক অনেক বেশী নিরীহ। কিন্তু বিভিন্ন সরকারী সংস্থা একে আসলে অনেক ক্ষতিকর ভাবে। কারণ Wiki Leak এর মত ওয়েবসাইট তাদের গোপন পর্দা অনেকবার ফাঁস করসে।

সখিনা:- আচ্ছা ডার্ক ওয়েবে তো অনেক সিকিউরিটি। তাও এদের ধরে কীভাবে?

আমি:- কিছু স্পেশাল কোম্পানি যেমন Darksun, Recorded Futures এর মত কোম্পানি ডার্ক ওয়েবে সাইবার ক্রিমিনালদের উপর নজরদারির কাজ করে। আবার কিছু স্পেশাল নিউজপেপারও আছে ডার্ক ওয়েবের উপর। যেমন:- Dept.Web, All Things Vice ইত্যাদি।

সখিনা:- বা বাহ!

আমি:- যতটা ছোটখাটো বিষয় মনে হয়, ততটা না। বিভিন্ন সাংবাদিকরা মতস্বাধীনতা আর নিজস্ব নিরাপত্তার জন্য বিশেষত যখন তারা সরকারের বিরুদ্ধে লেখে, তখন তারা ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করে।

সখিনা:- আর কিছু বাকি আছে?

আমি:- ও হ্যাঁ, রেড রুমের কথা বলা বাকি?

সখিনা:- ওইখানে কি লাল কালার বাত্তি জ্বলে নাকি রুমের দেয়ালের রঙ লাল?

আমি:- ওইটা এমন একটা ওয়েবসাইট যেখানে লাইভ সুইসাইড, মার্ডার আর রেইপ এর মত ভিডিও পাওয়া যায়।

সখিনা:- কিহ!!!!

আমি:- হ্যাঁ। ওইটা বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষের আড্ডাখানা। তবে ওইখানে ঢুকতে টাকা দিতে হয়। আগে ব্যাংক পেমেন্ট নিলেও এখন বিটকয়েনে পেমেন্ট দিতে হয়। অবশ্য এখন আর ডার্ক ওয়েবে এই সাইটগুলো পাওয়া যায় না। যেগুলো দেখা যায় সেগুলোর ৯৯% স্ক্যাম। ওরা আজকাল ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছে। তারা এখন Surface Web এ ব্যবসা চালায়।

সখিনা:- তুমি দেখসো?

আমি:- হ্যাঁ। গুগল ডর্কিং করি তো। তাই অনেক আনাচে-কানাচে ঘুরি। অনেককিছুই দেখি। পর্ণ ইন্ডাস্ট্রির চিপায়চাপায় ভালোয় ব্যবসা ফাঁদসে তারা। খুব শীঘ্রই মানে ২৬/২৭ সাল নাগাদ এই বিষয়ে নিউজ রিপোর্ট দেখলেও অবাক হব না।

সখিনা:- আমিও ডার্ক ওয়েবে ঢুকব🥺

আমি:- ও বাবা, আজকে আর না। একদিনে অনেক হয়সে। কালকে বলব কীভাবে সেখানে যেতে হয়।


তো যাই হোক,  ডা*র্ক ওয়েব সম্পর্কে সব জানার পর এখন সখিনার ইচ্ছা সে ডা*র্ক ওয়েবে যাবে। এখন সবকিছু তো আর মুখের কথা না ভাই। তার উপর সে বলে আবার মোবাইল দিয়ে যাবে। মহা-মুশকিলের বিষয়। তাই একটা সেইফেস্ট ব্যবস্থা নিলাম। তো আপনারাও যাতে মাঝে মাঝে একটু টুকি দিতে পারেন সেইজন্য আপনাদের সাথেও বিষয়টা শেয়ার করার সিদ্ধান্ত নিলাম। এতে আমার মতে এখন পর্যন্ত "Safest Way". এই পদ্ধতি ফলো করেও যদি আপনি হ্যাকড হন, তবে সেটা সম্পূর্ণই আপনার দোষ। তো এই পদ্ধতির জন্য আপনার যে মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট থাকা লাগবে:


  1. একটা এন্ড্রয়েড ফোন (ননরুটেড + মিনিমাম এন্ড্রয়েড ভার্সন ৬)

  2. একটা খুবই ভালো ইন্টারনেট কানেকশন

  3. আড়াই জিবি স্টোরেজ (ভালো হয় আপনার মোবাইলের স্টোরেজ ব্যবহার না করে একটা মেমরি কার্ড/পেনড্রাইভ জোটায় নিলে)

  4. মিনিমাম ৫/৬ জিবি ইন্টারনেট (আরো বেশি হলে আরো ভালো। আর ওয়াইফাই থাকলে তো টেনশন নাই)

  5. মিনিমাম ২ জিবি র‍্যামের একটা ফোন।

  6. একটা ফেইক আইডেন্টিটি(বিস্তারিত প্রসেসে বলা থাকবে)


উপরে বর্ণিত সব জিনিস সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন ব্যবস্থা করার। এইগুলোর এক বা একাধিকটা না থাকলেও ঢোকা যাবে। কোন সমস্যা নাই। তবে আপনি যেহেতু আমার পোস্ট দেখে ঢুকবেন, তাহলে এটা শিউর যে আপনি প্রথমবার ঢুকবেন। তাই নিরাপত্তার সাথে কোন কম্প্রমাইজ নাই। আপনি মারা খাইলে পরে আমাকে গাইল্লাবেন। কয়েকবার ঢোকার পর আস্তে আস্তে বিভিন্ন স্টেপ আপনি নিজে নিজে বুঝেই বাদ দিতে পারবেন।


এবার আপনার প্রথম কাজ হলো যে আপনার মোবাইলে একটা ডেডিকেটেড ফোল্ডার বানানো। যদি এক্সটার্নাল মেমরি কার্ড বা পেনড্রাইভ থাকে তাহলে তো ভালোই। এক্ষেত্রে এক্সটার্নাল মেমরি/পেনড্রাইভটা ফ্লাশ করে নেবেন। সব কাজ+ডাউনলোড এইখানেই করবেন। আমি সম্পূর্ণ প্রসেসের খুঁটিনাটি আলোচনা করব না। একটা ডিটেইলড ওভারভিউ আলোচনা করব। বাকিটা আপনারা ইউটউব থেকে দেখে নিতে পারবেন।  এবার প্রথমেই আপনার মোবাইলে VMOS Pro এপ্লিকেশনটা ডাউনলোড করে সেটাপ করে নেবেন। কিভাবে ডাউনলোড করবেন, কোথা থেকে ডাউনলোড করবেন, কিভাব সেটাপ করবেন সে সম্পর্কে ইউটিউবে অনেক ভিডিও পাবেন। এই এপটা হচ্ছে আপনার এন্ড্রয়েডের জন্য আরেকটা ভার্চুয়াল এন্ড্রয়েড। Tech Sakib নামে একটা ইউটিউব চ্যানেলে এই সম্পর্কে সবচেয়ে বেস্ট ভিডিও দেখেছি আমি।(এখন চ্যানেলটা নাও থাকতে পারে। প্যারা নাই। একটা ভিডিও দেখলেই হলো)। এবার সেই এপ এর সব পারমিশন মানে মাইক/লোকেশন/স্টোরেজ/ক্যামেরা এইসব অফ করে দেবেন সেটিংস থেকে গিয়ে(অফ আগে থাকলে প্যারা নাই)। ডাউনলোড শেষ হলে বাকি সব কাজের জন্য এইটাই আপনার মোবাইল। 


এখন আপনি আপনার নতুন মোবাইলের যেকোন একটা ব্রাউজারে যাবেন। গিয়ে Incognito Tab অন করবেন। এরপর Duck Duck Go সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে Fake Details Generator লিখে সার্চ দিবেন। এরপর বিভিন্ন ফেইক ডিটেইলস জেনেরেট করে নিবেন। একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন যেন ফেইক ইনফোগুলোর ক্ষেত্রে একটা আইডেন্টিকেল মিল থাকে। আশা করি বুঝচ্ছেন কি বলসি। এরপর thispersondoesntexist লিখে সার্চ দিবেন(এইভাবে হুবুহু দিবেন।) দিলে আপনারা একটা হুবুহু দেখতে ওয়েবসাইট পাবেন। সেই ওয়েবসাইটে গেলে একটা মানুষের ছবি পাবেন। কয়েকবার রিফ্রেস করে নেবেন। প্রত্যেকবারে ছবি পাল্টাবে। ওইখান থেকে আপনার ফেইক ইনফোগুলো অনুসারে একটা মানুষের ছবি নামায় নেবেন। টেনশন নাই, যাদের দেখতেসেন তারা কেউই দুনিয়াতে এক্সিস্ট করে না।(৯০% সম্ভাবনা)।


এবার প্লেস্টোরে যাবেন। প্লে-স্টোর চালাতে একটা জিমেইল তো লাগেই। ওইখানেই আপনার ফেইক ইনফোগুলো দিয়ে একটা একাউন্ট বানায় নেবেন। এরপর যে কয়েকটা এপ নিবেন:- 


  1. Orbot

  2. Orfox (এটা ফায়ার ফক্সের ডা*র্ক ওয়েব ভার্সন)


এইবার আসে মেইন ঢোকার পালা।(আপনি মোটামুটি প্রো হয়ে গেলে আগের বলা সব স্টেপ স্কিপ করতে পারবেন। আর যদি নিজের ঘরে পরে থাকা মোবাইল দিয়ে চালাতে চান, সে ক্ষেত্রেও ওই স্টেপগুলো স্কিপ করতে পারেন)। প্রথমেই Orbot ওপেন করবেন। ওপেন করে Start এ ক্লিক করবেন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবেন, এরপর আপনার Onion কানেক্ট হয়ে যাবে। আপনি উপরে বাম দিকে থ্রি বার এ ক্লিক করে আপনার কান্ট্রি দেখতে প্লাস চেঞ্জ করতে পারবেন। এরপর Orbot এ Browse এ ক্লিক করবেন। তখন দেখবেন এটা অটোমেটিক Orfox ওপেন করবে। এরপর আপনি আপনার মত করে বিভিন্ন ডা*র্ক ওয়েব ব্রাউজ করতে পারবেন। এইটা ছাড়া আরো অসংখ্য অসংখ্য পদ্ধতি আছে। আমি এভাবে চালাতাম, তাই আপনাকে এইটা সাজেস্ট করলাম।


এইভাবে করে আপনি সেইফলি ডা*র্ক ওয়েবে ঢুকতে পারবেন। আবারও বলি এই অনুসারে ঢোকার চেষ্টা করবেন। তাইলে আর কোন রিস্ক নাই। এবার বলি সেখানে নিরাপদ কিভাবে থাকবেন। সেখানে নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া। শুধু দেখে যাবেন। কোন ইন্টারেক্ট, লেন-দেন কিছুই করার দরকার নাই। কেন? কারণ ওইখানে এখন যাদেরকে ইললিগ্যাল সার্ভিস দিতে দেখবেন, সবাই-ই হয়, এফবিআই টাইপ লোকজন, নাইলে স্ক্যামার। বিভিন্ন সাইট ঘুরে ঘুরে দেখতেন পারেন কিভাবে কি আছে। বিভিন্ন ফোরামে গিয়ে মানুষজনের কথা-বার্তা দেখতে পারেন। আবারও বলি, কোন ইন্টারেক্ট করার দরকার নাই। লাইক/কমেন্ট/রিপ্লাই হেন-তেন টাইপ কিসসু করার কোন দরকার নাই। আর কোথাও লগিন করতে কোন ইনফো থাকলে ওই ফেইক ইনফোগুলো দিবেন।

কেন এই কথা বলতেসি? কারণ, যারা লেজিট ব্যবসায়ী, এখন সবাই তাদের ইললিগ্যাল ব্যবসা ডা*র্ক ওয়েব থেকে সারফেস ওয়েবে শিফট করতেসে। ব্যবসা নিয়ে আমার আগ্রহ আছে, তাই পড়ালেখাও আছে। ইন্টারনেটের আনাচে-কানাচে আমি ঘুরি। তাই সব আমি দেখি। বাকি ওইখানে যারা রয়ে গেসে তারা সবাই স্ক্যামার। আর নতুবা ব্যবসায়ী সেজে বিভিন্ন এফবিআই এজেন্ট ইত্যাদি ইত্যাদি ওৎ পেতে বসে থাকে অপরাধী ধরার জন্য। তাই কোন কাপ-ঝাপ করিয়েন না। আর এরপরও করতে গিয়ে মারা খাইলে, আপনার নিজ দায়িত্বে খাবেন। আমি দায়ী থাকব না। 


তো এই ছিল ডা*র্ক ওয়েব নিয়ে বিগিনার হিসেবে আপনার জন্য যাবতীয় খুঁটিনাটি। জীবনে কোনদিন ঘুরে না আসলে একদিন গিয়ে ঘুরে আসেন। এনজয় করেন-চিল করেন। শেষ করার আগে একটা মিথ ডিবাংক করে যায়। অনেকে মনে করেন ডার্ক ওয়েবে ঢোকা ইলিগ্যাল। এইখানে ঢোকা ইলিগ্যাল না এবং চাইলে যে কেউ ঢুকতে পারে। আপনি যেমন ক্রোম বা ফায়ারফক্স দিয়ে কোন ওয়েবসাইট চালান, ঠিক তেমনই টর দিয়ে ডার্ক ওয়েব চালায়। এতটুকুই।


- Bদায়

কলমে: তারুণ্য

logging out.........

Let's Connect:

Let's Connect:

Create a free website with Framer, the website builder loved by startups, designers and agencies.