আপনার ভাষায় Web3

আপনার ভাষায় Web3

Bangla

LLMs and Web hacking (Credit: Port Swigger)
LLMs and Web hacking (Credit: Port Swigger)
LLMs and Web hacking (Credit: Port Swigger)

ভাইরে ভাই, চারিদিকে Web 3.0 নিয়ে যে হারে আলোচনা আর গবেষণা হইতেসে মনে হইতেসে আজকেই এই বিষয় নিয়ে জেনে এই রিলেটেড একটা ব্যবসা দাঁড় না করাইলে জীবন বৃথা। বাকি জীবন ভিক্ষা করেও নাকি কাটাইতে পারবো না। কারণ মানুষজন ভিক্ষাও দেবে ডিজিটাল ওয়ালেটে ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে। এইডা কুনু কতা? এদিকে আমি এখনো একটা MetaMask ওয়ালেট খুইলতে পারলাম। মানে কি কইতাম। অবশ্য যেখানে নিজস্ব বিকাশ একাউন্ট নাই, সেখানে MetaMask এর আশা করা বিলাসিতা। দিনশেষে আমারে টাকা পাডানের কেউ নাই। কস টু টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি।


এখন, আমি শুরু গবেষণা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। ঘাঁটাঘাঁটির সময় আমার সামনে এসে সখিনা দাঁড়াল।


সখিনা:- এই আমারে এই এনাইডির ছবি তুলে দাও তো। তোমার হাতের ছবি ভালো।

স্ত্রীর প্রশংসায় যেকোন স্বামীই খুশি হয়। তাই আমি খুশিতে গদগদ হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,

আমি:- কেন গো?

সখিনা:- আর বিকাশ একাউন্ট খুলতেসি।

আমি:- এ্যাঁহ!!!! তোমার সোয়ামীর নিজেরই একাউন্ট নাই আর তুমি একাউন্ট দিয়ে কি করবা?

সখিনা:- আর Web 3.0 এর উপর একটা ব্যবসা দাঁড় করাইসি। MetaMask একাউন্ট তো আসেই। এখন ক্রিপ্টোকারেন্সি আসলে ওইগুলো বিকাশ থেকে তুলবো ভাবতেসি।


বিশ্বাস করেন রাসেল ভাই, এসএসসিতে পুরো জেলায় ৩৩ পাওয়া সখিনার মুখে এ কথা শুনে আমি মাতৃভাষা হারিয়ে পেলেচি। এইটা তো আমার জন্য রীতিমতো অপমানজনক। তাই আমি দেরি না করে ইউটিউব ঘাঁটতে বসলাম।


আমি পেলাম আমার প্রথম উত্তর। Web 3.0 হলো আমরা যে ইন্টারনেট ব্যবহার করি তার আপডেটেড ভার্সন। তাইলে, আমরা Web 2.0 ব্যবহার করতেসি। বিষয় তো ক্লিয়ার। তাইলে Web 1.0 কি ছিল? তো টিম-বার্নাস লি নামে এক অতি ভদ্রলোক যখন প্রথমবারের ইন্টারনেট আবিষ্কার করেন সেটাই Web 1.0 ছিল। আমি বললাম মচৎকার। তো আমি বললাম এইহানে প্রবলেম কি ছিল যে Web 2.0 আইলো?


তো যেটা পাইলাম। এইটাতে "Interact" করার কোন উপায় ছিল না। মানে এটা ইন্টারনেট কম ডিজিটাল পত্রিকা বেশি ছিল। মানে বিষয়ডা বুঝেন। আপনি আজকে পেপার খুললেন। খুলে দেখলেন যে শুরুতেই হেডলাইন:-


"আজ থেকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতশিল্পী হিরো আলম"


আপনার তখন মনে তীব্র ক্ষোভ জাগল। কিন্তু জাগলেও কিছু করার নাই। পত্রিকায় তো রিয়েক্ট বাটন আর কমেন্ট সেকশন নাই যে আপনি Angry React দিয়ে খিইচা দুইডা গা*লি দেবেন। কিন্তু আমার পোস্টে এই অপশন আসে। আপনারে দেওয়ার জন্য ফেসবুক কোম্পানি নিজেই ৬টা রিয়েক্ট আর পুরো একটা কমেন্ট সেকশন এই পোস্টের নিচে লাগাই দিসে। এখন দেখেন, এই যে আমি পোস্ট লিইক্ষা দিলাম, আমি তাইলে হইলাম গিয়ে লেখক আর আপনি পড়লেন। তাইলে আপনি হলেন পাঠক। এখন এই যে আপনি লাইক-কমেন্ট করার মাধ্যমে পোস্ট পড়ে আপনার মনের অনুভূতি আমাকে জানাইতে পারতেসেন; এইটা হলো স্বল্প পরিসরে একধরনের যোগাযোগ। আর এই স্বল্প পরিসরের যোগাযোগরে বলে "Interact"।


আপনি পোস্টে লাইক-কমেন্টের মাধ্যমে পোস্টদাতার সাথে স্বল্প পরিসরে যোগাযোগ করতে পারেন বা "Interact" করতে পারেন। এইটা Web 1.0 এ ছিল না। তখন মানুষ ইন্টারনেটে আসত, ওয়েবসাইটে যাইত, ব্লগ পোস্ট পড়ত, চলে যাইত। সিম্পল। তাই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য আসলো Web 2.0; যেটার সবচেয়ে বড় সংযোজন হিসেবে আসলো কমেন্ট আর রিয়েক্ট করার সুবিধা।


আর এই সুবিধা ব্যবহার করে আজকের দিনে মিলিয়ন ডলারের সোশাল মিডিয়া যেমন: ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ আর ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট যেমন: ইউটিউব ইত্যাদি আসছে এবং আসতেসে।


এখন এই নিয়া তো আমরা সুখেই ছিলাম। খুব তো ইউটিউবে র‍্যাপ শুনে স্টোরি দিয়ে, ফেসবুকে কুল ভাইভ কমেন্ট করে আর হ্যাকিং গ্রুপের পোস্টদাতাদের মেসেজে "ভাই আপনি ফেসবুক হ্যাক করতে পারেন" জিজ্ঞায় সুখেই দিনতো যাচ্ছিল। তা কি চুলকানি হইল যে আবার একটা Web 3.0 আনতে হইল।


ভাই, চাঁদেরও কলঙ্ক থাকে; আর এটা তো ইন্টারনেট! ইন্টারনেটে ঝামেলা থাকবে না এইডা হয়? Web 2.0 এ অসংখ্য ঝামেলার মধ্যে অন্যতম হলো:-


  1. Centralization

  2. No Privacy


নো প্রাইভেসি সহজ বিষয়। মানে আজকের দিনে আপনি কি করতেসেন সব তথ্য ফেসবুকের কাছে আছে। ফেসবুকের কাছে আপনার মোবাইলের স্টোরেজ, স্পিকার, সেল্ফি ক্যামেরা, ব্যাক ক্যামেরা, লোকেশন সবকিছুর এক্সসেস। আপনি কোন পোস্ট কতক্ষণ, কোথায়, কীভাবে পড়সেন, পড়ে আপনি কি কমেন্ট করসেন, কি রিয়েক্ট দিসেন, কি সার্চ করসেন, কেন সার্চ করসেন এমন হাবিজাবি সব তথ্য আসে। এই তথ্য তারা বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বেঁচে আর কোম্পানি সেই তথ্য ব্যবহার করে আপনাকে টার্গেট করে এড বানায় আপনাকেই তাদের প্রোডাক্ট বেঁচে। যে কোম্পানির নাম জীবনে শোনেন নাই তাদের কাছে আপনার বায়োডাটা আছে। বিশ্বাস না হলে এই পোস্ট পড়ার পর গিয়ে আপনি কেনা যায় এমন কিছু একটা ফেসবুকে সার্চ দেন। ২৪ ঘন্টার মধ্যে আপনি ওই প্রোডাক্ট রিলেটেড এড দেখবেন। এজন্য স্বয়ং মার্ক জাকারবার্গ নাকি ল্যাপটপ চালানোর সময় ক্যামেরার উপর ট্যাপ মারি রাখে। মানে কথাডা বুঝেন!!!! এখন আপনি যদি এইসব শুনে ফেসবুক/গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন, তাইলে সিদ্ধান্ত পাল্টান। কারণ, আপনার ডাটা নেওয়ার অনুমতি আপনি নিজেই দিসেন। মনে পড়ে? এপ চালু করার সময় আপনার সামনে একটা বিশাল লিস্টি আসছিলো যেটা না পড়েই আপনি "I agree" তে ক্লিক করসিলেন। এরপর প্রতি পদে পদ Pemission Allow করসিলেন। ওইগুলোই ছিল ওদের অনুমতি দেওয়া। সম্প্রতি আইফোন তাদের অপরেটিং সিস্টেম IOS এর ভার্সন 14.5 এ একটা ফিচার লঞ্চ করসে। ওই ফিচার অন/অফ করার মাধ্যমে আপনি কোন এপ আপনাকে ট্র‍্যাক করতে পারবে কিনা সেটার অনুমতি দিতে/নিয়ে ফেলতে পারবেন। ধারণা করা হচ্ছে এই এক ফিচারের জন্য ফেসবুকের নাকি ১০বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে!

১০ মিলিয়ন ডলার!!!!!!!!!!!!!


আমি জীবনে ১০ ডলার একসঙ্গে দেখি নাই!!!!!!!! এরা ১০ মিলিয়ন ডলারের লস দেয়!!!!!!!!! এদের বিজনেস মিটিং কি এরকম হয়???


মার্ক জাকারবার্গ:- এবছর আমাদের কত টাকা লাভ হয়েছে?

এমপ্লয়ি:- তেমন আশাব্যাঞ্জক না স্যার। মাত্র ১০০০০ বিলিয়ন ডলার।

মার্ক জাকারবার্গ:- আচ্ছা এক কাজ কর তাইলে। এখান থেকে ১ বিলিয়ন ডলার লস দিয়ে এই প্রজেক্ট লঞ্চ করে দেখো তো। কেমন হয়।


মানে ব্যাপারটা দেখেন! আরেকটা মজার বিষয় বলি। পৃথিবীর মোট সার্চের ৮৭% কন্ট্রোল করে! ৮৭%! মানে জনপ্রতি প্রতি ১০০টা সার্চের ৮৭টা। এই আলোচনাটা যদি আপনি মনোযোগ দিয়ে পড়ন তাহলে আপনার কাছে বিষয়টা ক্লিয়ার হচ্ছে যে Web 2.0 এর সমস্যা কোথায়। পুরো ইন্টারনেটকে নিজের কব্জায় রেখে চালাচ্ছে ফেসবুক/গুগলের মত ২/৩টা কোম্পানি। ঠিক যেভাবে আমার ঘরের সমস্ত কিছু শাসনভার সখিনার হাতে। যাই হউক সেদিকে না যায়। তো এই যে একটা বিশাল জনগোষ্ঠীর সমস্তকিছু সেই গোষ্ঠীর কিছু হাতে-গোণা কয়েকজন মানুষ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কন্সেপ্টটাকে বলে "Centralization"।


তো তাইলে আমরা এখন শিউর যে Centralization আর এই Centralization এর ফলে তৈরি হওয়া নিজের গোপনীয়তার আর গোপন না থাকার সমস্যা বা No Privacy Problem এই দুইটা বড় এবং ভয়ানক কারণই হলো Web 3.0 এ চুলকানির মূলে।


সখিনা:- ভাইদাইম্ম......আমি তোমার ঘরের শাসনব্যবস্থা কুক্ষিগত রাখি?????? আজকে তোমার একদিন কি আমার একদিন। আমার বটি'টা কোথায়?


[ আমি আপাতত হাসপাতালে ভাই। বাকিটা হাসপাতাল থেকে এসে লিখতেসি!!! দোয়া করবেন ]


(২)


তো বাঈ আমরা একন কতা বলব পুরো Web 3.0 নিয়ে। মানে Web 3.0 এর প্রায় সব ইতিহাস আলোচনা শেষ। এবার বাকি সব বেসিক খুঁটিনাটি আলোচনা হবে। তো আমরা জানি যে আমাদের এখন Web 2.0 এর যুগ চলতেসে। যেকানে আমরা ইচ্ছামত যোগাযোগ অর্থাৎ Interact করতে পারে। কিন্তু এই ওয়েবে আমার কুনু প্রাইভেসি নাই ভাই! আজকাল মোবাইল দিয়ে ছবি তুলতেও ডর লাগে। বাইক্কা পটোগুলোও না ফেসবুক কালেক্ট করে বেচে দেয়! অবশ্য এটা ভেবে বালোই লাগে যে কেউ আমার সম্পর্কে জানার জন্য ডলার খরচ করতে রাজি। নিজেরগুলো নিজেই বেঁচে দেবো ভাপতেসি। Metamask এ একাউন্ট খুলতেই হবে।


আর তাছাড়া এই ইন্টারনেট আমি টাকা দিয়ে চালায়ও কোন ক্ষমতা আমার হাতে নাই!!!! সব ক্ষমতা কিনা আমার টাকায় বউ চালানো ফেসবুক/গুগলের মালিকের হাতে। কুনু কতা!!!!! এদিকে মার্ক জাকারবার্গের বউ নাকি চাইনিজ!! কোনদিন নাকি ফেসবুকের ভাষা চ্যাং চুং চাইনিজ বানায় দেয় কে জানে!!!


তো যাই হউক। Web 3.0 নাকি Web 2.0 এর সমস্যা সলভ করবে। কারণ, Web 3.0 তে নাকি আছে DOB; না ভাই, Date of Birth না। এই DOB মানে হচ্ছে:

Decentralized Open-Source Secured by Blockchain


দাঁড়ান দাঁড়ান ভাই। ধাক্কাধাক্কি করবেন না। আপনি বুঝেন নাই যে আমিও জানি। মানে আপনাকে বুঝাই। প্রথমে আসি Decentralised এ।


এটা হচ্ছে Centralized এর সম্পূর্ণ বিপরীত। আমাদের Web 2.0 এর সব ক্ষমতা ১/২টা বড় কোম্পানির হাতেই চলে গেসে প্রায়। Web 3.0 এ এই বিষয়টি থাকবেই না। পুরো ইন্টারনেটের মালিকানা নাকি পুরো বিশ্ববাসীর মাঝে ভাগ করে দেবে! মানে সবাই নাকি ইন্টারনেটের মালিক হয়ে যাবে!! আমি-আপনিও!!!! তো ভাই নেক্সটা টাইম থেকে সমঝে চলবেন। আমি ইন্টারনেটে শতকরা ১% এর ভবিষ্যৎ মালিক। হ্যাঁহ! ইসসসস!!! যদি আমার বাসায়ও Web 3.0 এসে বাসার মালিকানা Decentralised হয়ে যেত। সখিনার পাশাপাশি ক্ষমতা আমার হাতে থাকত।


দ্বিতীয় কথা হচ্ছে Open Source; মানে হচ্ছে যেহেতু আপনি ইন্টারনেটের মালিকানা পেয়ে যাবেন, আপনি চাইলে এই ইন্টারনেট নিজের মত কাস্টমাইজও করতে পারবেন!!!! আমি এই প্রযুক্তি পাইলে তো কথায় ছিল না। পুরো ইন্টারনেট কালা বানায় ফেলতাম। ঠিক আমার ভবিষ্যৎ আমি যেভাবে কালা বানায় ফেলসি!!! কস টু টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি! এই Open-Source বিষয়টা আমারও দরকার। 


ওইদিন সখিনা আসি আমারে জিজ্ঞাইলো,


সখিনা:- আজকে পোলাও রাধমু না বিরিয়ানি?

আমি:- বিরিয়ানি।

সখিনা:- নাহ! বিরিয়ানি রানতে মন চাচ্চে না। পোলাও রানমু।

আমি:- আজিব!!! তো আমারে জিজ্ঞানের দরকার কি ছিল????

সখিনা:- বেশি মাতবা তো Domestic Violence এর কেস দিয়া দিমু।

আমি:- [মনে মনে, সখিনার উপর কি শিক্ষিত জ্বীন ভর করসে নাকি?]


বুজেন ভাই। কুনু কতা? আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলের মধ্যে একটা ছিল বিবাহ। সবাই আমার ডিভোর্সের জন্য দোয়া করবেন।


তো লাস্ট পয়েন্ট হলো Secured by BlockChain সুবিধা। মানে এখানের সব তথ্য Blockchain এর সাহায্যে সুরক্ষিত থাকবে এবং আপনার Data নিয়ে কেউ ব্যবসা করতে পারবে না। এই ওয়েবে সব ফিচারই কিন্তু জোস।


আইচ্চা, আপনার কি এখনও পর্যন্ত একবারও মনে হয় নাই যে এই Web 3.0 এর আইডিয়া সবার আগে আসছিলো কার মাথায়?


এইটার উত্তর হলো Dr. Gavin Wood নামে এক ব্যাক্তি যে Ethereum নামে একটা ক্রিপ্টোকারেন্সি এর কো-ফাউন্ডার পুরো পৃথিবীকে Web 3.0 এর সাথে পরিচয় করান। Ethereum পৃথিবীর জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত ক্রিপ্টোকারন্সিগুলোর মধ্যে একটি।

আমি এখনো নিজেকে ভালো করে প্রতিবেশি ভাবীর কাছেই পরিচয় করাইতে পারলাম না। আর ইতে Web 3.0 এর সাথে পরিচয় করাই।


তো এখন আসি Web 3.0 এর সবচেয়ে বড় ৫ টা সুবিধা:


  1. Anonymous Single Sign On: মানে আপনি কোথাও একবার Sign Up করে একটা একাউন্ট ক্রিয়েট করলেই হবে। সারাজীবনে আর পুরো ইন্টারনেটের কোথাও Sign In করা লাগবে না আর আপনার ইউজার ডিটেইলস থাকবে একদম সিকিউরড। মানে আমার মত আপনার সব তথ্য বউয়ের মাধ্যমে শ্বশুড বাড়ি পৌঁছে যাবে না।

  2. Self Governing: মানে এখন কোন ওয়েবসাইট আপনার জন্য নিয়ম তৈরি করে। Web 3.0 এসে গেলে ইউজাররা নিজেরা মিলে ওয়েবসাইটের জন্য নিয়ম বানাতে পারবে। মানে এখন ঘরে সখিনা শুধু আমার উপর নিয়ম জারি করে। আমার ঘরে Web 3.0 আসলে আমিও সখিনার উপর রুল জারি করতে পারবো

  3. Personalized Browsing Experience:- আজকের দিনে আপনি যখন কোন ওয়েব খুলেন, এটা সবার জন্য একইরকম খুলে এবং ওয়েবের মালিক যেরকম বানাইসে সেরকমই খুলে। কিন্তু Web 3.0 আসলে আপনার জন্য কোন ওয়েবসাইটের ডিজাইন কেমন হবে সেটা ঠিক করতে পারবেন। যেমন, আমার কাছে সব ব্রাউজার খুলবে কালা।

  4. Uninterrupted Service:- মানে সহজ কথায় Web 3.0 এর কোন সার্ভিস এর সার্ভার কখনই ডাউন হবে না। যেটা প্রত্যেক রেজাল্টের সময় শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইট হয়ে যায়। ওদের উচিত Web 3.0 ব্যবহার।

  5. Better Search:- আজকের দিনে আপনি যখন কোন কিছু খুঁজেন তখন আপনাকে অনেক পার্টিকুলার হইতে হয়। মানে ধরেন আমি একটা গান শুনলাম। আমি এখন সখিনাকে গানটা সম্পর্কে এভাবে জিগাইতে পারি, 


আমি: ওই সখিনা, ওই গানটার নাম কি যে?

সখিনা: কোন গান?

আমি:- ওই যে আলমগীর গাইসিলো। ইতে ঢাকায় রিকশা চালাইতো।

সখিনা:- আরে, নামটা মনে আসতেসে না যে।

আমি:- ওই যে, প্রথম লাইন ছিল "ও সখিনা, গেসোস কিনা ভুইলা আমারে। আমি অহন রিশকা চালায় ঢাকা শহরে"। ভাবতেসি একটা রিশকা নিবো।

সখিনা:- ভাদাইম্ম...........


এইভাবে কিন্তু আপনি কোন গান ইউটিউবে সার্চ করতে পারবেন না। করলেও তেমন সুবিধা পাবেন না। আপনাকে গানের নাম লিখে সার্চ করতে হবে। কিন্তু আমি Web 3.0 তে এভাবে সার্চ করতে পারবো। ধারণা করা হচ্ছে এই সব সুবিধার সর্বোচ্চ পরিমাণ এক্সেস পাওয়া যাবে Metaverse এ কারণ এটা একটা অন্য দুনিয়া। তবে এইসব পেরিয়ে আমার কাছে কোন বিষয় সবচেয়ে জোস লাগে জানেন? কেমনে জানবেন? আজিব!!! আমার মনের কথা আপনি কেমনে জানবেন? আমার সবচেয়ে জোস লাগে:

"আপনি Web 3.0 তে এড দেখার জন্যও টাকা পাবেন"


মানে এতদিন কি হতো? আপনি ধরেন ইউটিউবে একটা এড দেখতেন এর বিনিময়ে যার ভিডিওতে এড ছিল সে আর ইউটিউব কামাতো। আপনি আঙ্গুল চুসতেন। Web 3.0 তে আপনি এই এড দেখার জন্যও টাকা পাবেন। আর এই বিষয়টা অলরেডি চলতেসে বর্তমানে। চাইলে আপনি এখন থেকেই কামাতে পাবেন। আর সেটা হচ্ছে Brave Browser এ; যাকে মানা হচ্ছে Web 3.0 এর Chrome.


হঠাৎ মনে হলো পেছনে কে জানি দাঁড়াই আসে। চমকে তাকায় দেখি সখিনা। তার সাথে পাশের বাসার ভাবি ভয় ভয় মুখে দাঁড়াই আসে।


সখিনা:- তোমার না পাশের বাসার ভাবির সাথে পরিচিত হতে হবে? নাও। হও।

আমি:- [খুশিতে গদগদ মুখে] ভাবি, ভালো আছেন?


[এখন হাসপাতালে "ওয়াল্ড ওয়ার ফোর" চলতেসে। যুদ্ধ শেষ হলে আবার বাকিটা বলব]


(3)


তো Web 3.0 এর এত্তো গুণকীর্তন গাওয়ার পর আপনার মনে হতেই পারে যে এত্তো ভালো প্রযুক্তি এখনো আসে নাই কেন? তো এখন মূলত আলোচনা হবে যে Web 3.0 আসলো না কেন বা Web 3.0 এর সবচেয়ে বড় ৫টা অপকারীতা। মানে এখন রোস্টিং হবে।)


তো গতবারের ওয়াল্ড ওয়ার থামাইতে তেমন কোন কষ্ট হয় নাই। কারণ সেদিন ১লা এপ্রিল ছিল। উল্টা-পাল্টা ভাইবেন না। আমার জীবনের একমাত্র নারী "সখিনা"ই। তো


Web 3.0 নিয়ে কথা হচ্ছিল। তো এত্তো ভালো ভালো কথা শুনে ভাবলাম, এই Web 3.0 এর কোন সমস্যাই নাই???????


অতঃপর টর্চলাইট দিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজির পর পাইলাম এই অসুবিধার কথাগুলো। মূলত অসুবিধার কথাগুলো সবার আগে বলসিলেন Jack Dorsey যিনি টুইটারের Founder ওরফে Ex CEO; যার টুইটারে এখন ইলন মাস্ক নাকি ইংলিশ টয়লেট এনে ফিট করতেসে। আচ্ছা এখানে একটা মজার তথ্য বলি। টুইটারের যে লোগোটা আছে সেইখানে যে পাখিটা আছে ওইটার একটা নাম আছে কিন্তু। ওই পাখিটার নাম "Larry"। তো যাই হোক, Jack বদ্দা টুইটারে টুইট করে বলসিলো (না মানে টুইটারের সিও আর কোথায় বলতে পারে বলে আপনার মনে হচ্ছে?) যে: ইন্টারনেটকে Decentralised করা যাবে না। এটার একটা মালিক থাকা লাগবেই। না হলে অনেক সমস্যা দেখা দিবে। সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা দেখা দিবে সেটা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বা নজরদারির অভাবে সাইবার ক্রাইম অনেক বেশি পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে! আর এই সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণ করতে প্রায় হিমশিম খাইতে হবে। যেভাবে হিমশিম খাই আপনার লুচু বন্ধু, সুন্দরী মেয়ে দেখে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে। এই সেইম কন্সেপ্টা মূলত এখন ডার্ক ওয়েবে ঘটে!


পরের যে সমস্যা দেখা দেবে সেটা হলো Force Update সমস্যা। মানে Web 3.0 প্রচুর রিসোর্স আর ফিচার লোডেড। তাই Web 3.0 এক্সসেস করতে হলে সবগুলো পুরোনো হার্ডওয়্যারকে জোরজবরদস্তি আপডেট করতেই হবে। হার্ডওয়্যার আপডেটের লোড নিতে পারলে তো ভালো। নাইলে: "আচ্ছা চলতা হু, দুয়ায়ো মে ইয়াদ রাখনা"। একইসাথে সব বিজনেসকেও Web 3.0 তে শিফট হতেই হবে। নাইলে:


"টুটে হে ইজ তারাসে "বিজন্যাস", "প্রফিট" তাক না আয়ে"


লাস্টে যে বড় ধরণের সমস্যা আসে, এটা অনেক বেশি কনফিউজিং। দেখেন, Web 3.0 পূর্ণভাবে Blockchain দিয়ে সিকিউরড থাকবে। আবার ব্লকচেইন এবং Web 3.0 দুইটাই Decentralised এর ভিত্তি করে তৈরি করে। আমরা জানি, Decentralisation এর উপর ভিত্তি করে বানানো সবকিছুর মালিকানা Distributed মানে সবার মাঝে ভাগ-বাটোয়ারা করে দেওয়া। তার মানে আপনার কাছে ইন্টারনেটের মালিকানা আছে তার মানে আপনার কাছে ইন্টারনেটের এক্সসেসের সুবিধাও আছে। তার মানে "হয়তোবা" Web 3.0 ব্যবহার করে যে কেউ ইন্টারনেটে থাকা যে কারো Public এবং Private ডাটা এক্সসেস নিতে পারবে। এদিকে Web 3.0 আসার মূল কারণগুলোর মধ্যে একটা হলো No Privacy Problem সলভ করা। কি আজব সমস্যা না? অনেকটা এরকম:


"আমি সবসময় মিথ্যা কথা বলি"


এইতো। এই ছিল Web 3.0 এর বেসিক নিয়ে খুঁটিনাটি (আমার সীমিত জ্ঞানে)। তবে এটা এখনো "থিওরি" আকারে আছে। Metaverse এ Web 3.0 ইমপ্লিমেন্ট হওয়ার সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা রয়েছে। যাতে আরো ৫-১০ বছরের মত সময় আছে। আপনার কি মনে হয়? Web 3.0 প্রযুক্তি আসা উচিত? আমি মনে করি "হ্যাঁ"। কারণ, There are no unmixed blessings on Earth.


Bদায়

কলমে:- তারুণ্য

Let's Connect:

Let's Connect:

Create a free website with Framer, the website builder loved by startups, designers and agencies.