২য় মস্তিষ্ক

২য় মস্তিষ্ক

Bangla

Second Brain
Second Brain
Second Brain

আচ্ছা বলুন তো, আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কি? তর্কসাপেক্ষে অনেক অঙ্গের কথা বলা গেলেও, এর সঠিক উত্তরে নিঃসন্দেহে “মস্তিষ্ক” এর নাম বলাই যায়। আমাদের শরীরের সব কাজ মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণেই করা হয়। তবে যে কাজে আমরা সরাসরি মস্তিষ্কের ব্যবহার দেখতে পাই সেটা হলো, সৃজনশীলতা এবং তথ্য সংরক্ষণ। এর মধ্যে তথ্য সংরক্ষণ করতেই আমরা সবচেয়ে বেশী হিমশিম খাই। সারাদিনই নানা তথ্য সংগ্রহ করি বিভিন্ন জায়গা থেকে। প্রয়োজনীয় মূহূর্তেই গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্ট মনে পড়ে না(যেমন ঝগড়া)। কেমন হতো যদি আমরা নিজেরাই সব তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য একটা ২য় মস্তিষ্ক বানাতে পারতাম। সেখানে তথ্য সংরক্ষণ করার পাশাপাশি সার্চের সুবিধাও থাকত। আজকে আমি মূলত এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করতে চলেছি।


আলোচনা শুরু করা যাক। প্রথমেই আসলে বলতে হয় ২য় মস্তিষ্ক জিনিসটা বা বিষয়টা কি? সাধারণত ১ দিনে ২৪ ঘন্টা। ধরলাম, এই ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৮ ঘন্টা আপনি ঘুমের পেছনে আর ২/৩ ঘন্টা খাওয়া আর ঘুমের পেছনে ব্যয় করেন। তার মানে আপনার হাতে থাকে আরও ১২ ঘন্টার মত। এই সম্পূর্ণ সময়ই আপনি কম-বেশি মোবাইল চালান, বই পড়েন, ক্লাসে যান। আর এই কাজগুলোর মাধ্যমে আপনি আসলে প্রচুর তথ্য জোগাড় করেন। একটা নিউজ আর্টিকেল এর মতে, আমরা প্রতিদিন গড়ে যে তথ্য সংগ্রহ করি তা দিয়ে ১৭৪টা পত্রিকা বানানো যাবে। এই তথ্যগুলোর মধ্যে সবগুলো না হোক, বেশিরভাগগুলোয় আপনার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আর এই তথ্য সংরক্ষণের কাজ করতে হয়, আপনার মস্তিষ্কের। কিন্তু সেই বেচারা অন্যান্য কাজের চাপে এই কাজ তেমন ভালোভাবে করতেই পারে না। ফলে দেখা যায় অল্প সময়ের মধ্যেই আপনি বেশিরভাগ দরকারী তথ্য ভুলে বসে আছেন।


আর এইখানেই আপনার রক্ষক হয়ে আসে ২য় মস্তিষ্ক তথা SECOND BRAIN; কী কাজ তার? এই SECOND BRAIN তথা ২য় মস্তিষ্কের কাজ আপনার মূল মস্তিষ্কের হয়ে তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা। যাতে আপনি চাইলেই চট করে খুঁজে নিতে পারেন আপনার ৫ বছর আগের সংগ্রহিত তথ্য। আর এর ফলে চাপ কমে আসে আপনার মস্তিষ্কের উপর আর সে আরো মনোযোগী হয়ে উঠতে পারে সৃজনশীলতা আর অন্যান্য কাজের উপর।


এখন সমস্যা কী সেটা জানলাম আর সমাধান কি সেটাও জানলাম। কিন্তু সমস্যার কি আর শেষ আছে রে ভাই? এখন সমসযা হলো এই সমাধান জীবনে এপ্লাই করবো কীভাবে? কীভাবে একটা ২য় মস্তিষ্ক বানাবো? পূর্বের সমাধানের মতই সহজ এই সমস্যার সমাধান। আমাদের একটা নোটপ্যাড এবং ডায়েরী জোগাড় করতে হবে এবং সময়ে সময়ে সেখানে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে লিখে রাখতে হবে। আর সেই নোটপ্যাড বা ডায়েরীই হয়ে উঠবে আমাদের ২য় মস্তিষ্ক। পানির মতই সহজ একটা সমাধান না? কিন্ত আসলে তা না। আপনি ধরুন সিদ্ধান্ত নিলেন, আজকে থেকেই একটা ২য় মস্তিষ্ক বানাবেন আর মূল মস্তিষ্কের উপর চাপ কমিয়ে প্রোডাক্টিভিটি বাড়িয়ে নিবেন। সিম্পল একটা বিষয়। তাই না? এমনটা ভাবলে ভুল করবেন। কেন? কারণ, আপনি প্রথমেই খেয়াল করবেন, আপনি আসলে অনেক তথ্যকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন। আবার অনেক তথ্য রেখে দিচ্ছেন পরে লিখবেন বলে। পরে আপনি ভুলে যাচ্ছেন সেই তথ্য। তাই এই বিষয়টি যত সহজ আর সাধারণ মনে আছে আদতে তা না। লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি বা টেইলর সুইফট এর মত অনেক সফল ব্যাক্তিই এই কাজটি করে থাকেন। তারা সবসময় তাদের সংগৃহীত তথ্য বা মাথায় আসা নতুন তথ্য নোট করে রাখতো। 


 যাই হোক, সিম্পল জিনিসকে আর টেনে লম্বা করে পিম্পল না বানিয়ে শেষ করি। তবে তার আগে শেয়ার করে যাই কিছু উপদেশ। যদি ফিজিক্যাল ২য় মস্তিষ্ক বানাতে চান, তবে ভালো একটা ডায়েরী ব্যবহার করতে পারেন। সাথে পেন্সিল আর রাবার রাখবেন কলমের বদলে। ভালো কাজে দেবে। বাইরে যাওয়ার সময় ব্যাগে আর ঘুমানোর সময় মাথার কাছে রাখার চেষ্টা করবেন। বেশিরভাগ জোস আইডিয়া শৌচাগারে থাকা অবস্থায়, ঘুমের সময়ে আর পাবলিক ট্রান্সপোর্টে থাকাকালীনই আসে। কেন কে জানে? আর অনলাইনে বানাতে চাইলে ব্যবহার করতে পারেন Colornote(for android)/Notion(all platform)।


  • Bদায়

কলমে: তারুণ্য

Let's Connect:

Let's Connect:

Create a free website with Framer, the website builder loved by startups, designers and agencies.